Sunday, May 31, 2015

অণু-অনুভব

সামর্থ্যহীন
আর কতোদিন !
জীবন ঠেকে
বেজায় কঠিন...

Saturday, May 30, 2015

ধূমপানঃ ক্ষতিকর পরোক্ষ প্রভাব

প্রাক-কথাঃ 'ধূমপান' শব্দটি 'ধূম' এবং 'পান' শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। ধূম হলো 'ধোঁয়া' বা বাষ্পের প্রতিশব্দ। যেহেতু  তামাকজাতীয় পদার্থের ধোঁয়া গ্রহণ করা হয় বা পান করা হয়, তাই একে 'ধোঁয়া পান' করা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, সে হিসেবে ধূমপান শব্দটি গঠিত। ধূমপান হচ্ছে তামাক জাতীয় দ্রব্যাদি বিশেষ উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে শ্বাসের সাথে তার ধোঁয়া শরীরে গ্রহণের প্রক্রিয়া। সাধারণ যেকোনো দ্রব্যের পোড়ানো ধোঁয়া শ্বাসের সাথে প্রবেশ করলে তাকে ধূমপান বলা গেলেও মূলত তামাকজাতীয় দ্রব্যাদির পোড়া ধোঁয়া গ্রহণকেই ধূমপান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। 

ধূমপানের প্রকারভেদঃ 

ধূমপান দুই ধরনের হতে পারে। যথা-

  • সক্রিয় ধূমপান :ধূমপায়ী যে অবস্থায় জলন্ত সিগারেট বা বিড়ি বা চুরুট থেকে উদ্ভুত ধোঁয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে টেনে সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করায় তাকে সক্রিয় ধূম্পান বলে।
  • নিস্ক্রিয় ধূমপান :ধূমপানের সময় ধোঁয়ার যে অংশ চারপাশের পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনৈচ্ছিকভাবে মানুষের দেহে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে প্রবেশ করে নিস্ক্রিয়/পরোক্ষ  ধূমপান বলে।

ধূমপানের অপকারিতা - পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাবঃ 
গবেষণায় দেখা গেছে সিগারেটের ধূমপানে নিকোটিনসহ ৫৬টি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বিরাজমান।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বের ১৯২টি দেশে পরিচালিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিজে ধূমপান না করলেও অন্যের ধূমপানের (পরোক্ষ ধূমপান) প্রভাবে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ৬,০০,০০০ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ১,৬৫,০০০-ই হলো শিশু। গবেষণায়ও এও বেরিয়ে এসেছে যে, পরোক্ষ ধূমপান পুরুষের তুলনায় নারীর উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৮১,০০০ নারী মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে পরিচালিত এজাতীয় আরেকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিলো যে, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ৪০% শিশু, ৩৩% অধূমপায়ী পুরুষ এবং ৩৫% অধূমপায়ী নারী রয়েছেন। তাতে এও ফুটে ওঠে যে, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন ইউরোপ ও এশিয়ার মানুষ।

 গ্লোবাল এডাল্ট টোবাকো সার্ভে অনুসারে, বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৩ লাখ লোক পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার। এর মধ্যে ১ কোটি নারী। কর্মক্ষেত্রে ৬৩%, পাবলিক প্লেসে ৪৫% মানুষ ধুমপান করছে। আরও জানা যায়, শুধুমাত্র দেশের সকল রেস্তোরাঁ ও হোটেলে ২ কোটি ৫৮ লাখ মানুষ ধূমপান করছে। চিকিৎসকরা বলেছেন- ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য সেবনের ফলে ২৫টি প্রাণঘাতী রোগের প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তামাক বলতে শুধু বিড়ি বা সিগারেট সেবনকে বুঝায় না। পানের সাথে জর্দ্দা, সাদা, গুল, খৈন, নার্সি ইত্যাদিকেও বুঝায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাষায়- বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম  ধূমপায়ী চিহ্নিত দেশ। 

শিশুর জন্য সমস্যাঃ  পরোক্ষ ধূমপানের জন্য শিশুরা সবচেয়ে বেশি  ক্ষতির শিকার হয়। শিশুরা সাধারণত নিন্মলিখিত স্বাস্থ-ঝুঁকিতে পড়েঃ 

- ফুসফুসে নানা ধরনের সংক্রমণ;
- ব্রঙ্কাইটিস ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা;
- শিশুর কানে সংক্রমণ;
- শিশু শ্বাসকষ্টে ভোগা
- দীর্ঘদিন কাশি;
- অ্যাজমা
- গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি ঝরা।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলা

এমনকি শিশু Sudden infant death syndrome (SIDS) এর শিকারও হতে পারে এই পরোক্ষ ধূমপানে। 


নারীর জন্য সমস্যাঃ  নারীর উপরও পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব অত্যন্ত উদবেগজনক। বিশেষকরে গর্ভবতী নারীর খুবই ঝুঁকিতে থাকে এর প্রভাবে। গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে পরোক্ষ ধুমপানে যা ঘটতে পারেঃ

- মিসকেরেজ (miscarriage)
stillbirth
- জন্মকালীন শিশুর স্বল্প ওজন 


বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ও প্রতিপাদ্যঃ
৩১ মে  বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে তামাকের ব্যবহার কমানোকে উৎসাহিত করার জন্য তামাকমুক্ত দিবস পালন করে আসছে। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের  প্রতিপাদ্য- ‘তামাকের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ কর’ (Stop illicit trade of tobacco products) তামাকের অবৈধ বাণিজ্যের ফলে সরকার প্রতিবছর বিপুল অংকের রাজস্ব  হারায়। সংঘবদ্ধ চোরাকারবারমাদকপাচার ও মানবপাচারের মত ভয়াবহ ঘটনার ঝুঁকি সৃষ্টিতেও সহায়তা করে তামাকের এই অবৈধ ব্যাণিজ্য। এছাড়াও এ কারণে সরকার গৃহীত তামাক নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন: ছবিসহ সতর্কবাণী ইত্যাদির প্রভাবও অকার্যকর হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতেকর বাড়িয়ে বিদেশি তামাকপণ্যের সাথে দাম-পার্থক্য কমানোশক্তিশালী কর-প্রশাসন এবং সর্বপরি রাষ্ট্রযন্ত্রের সদিচ্ছাই পারে তামাকের অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে।

নিয়ন্ত্রণ বিধিমালাঃ 

দেশে তামাকজনিত ক্ষতি হ্রাসে সরকার ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গৃহীত আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’-এ স্বাক্ষর করে। ওই চুক্তির বিধানাবলি প্রতিপালনে এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫’ প্রণয়ন করে সরকার। ২০০৬ সালে প্রণীত হয় এ সংক্রান্ত বিধিমালা। কিন্তু কিছু দুর্বলতার কারণে আইনটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারায় ২০১৩ সালের মে মাসে আইনটি যুগোপযোগী করে সংশোধিত আকারে পাস করা হয়। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ২৩ মাস পর সংশোধিত আইনের আলোকে প্রণীত বিধিমালাটি গত ১২ মার্চ গেজেট আকারে পাস হয়েছে। 
সংশোধিত আইন ২০১৩ ও বিধিমালা ২০১৫-তে নারী, শিশুসহ সব অধূমপায়ীকে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার থেকে রক্ষায় কঠোর বিধান রাখা হয়েছে। আইনের ধারা ৪ অনুযায়ী ‘পাবলিক প্লেস’ ও ‘পাবলিক পরিবহনে’ ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনে ২৪ ধরনের স্থানকে ‘পাবলিক প্লেস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে যার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, আধা-সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও বেসরকারি অফিস, গ্রন্থাগার, লিফট, আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, আদালত ভবন, বিমানবন্দর ভবন, সমুদ্রবন্দর ভবন, নৌবন্দর ভবন, রেলস্টেশন ভবন, বাস টার্মিনাল ভবন, প্রেক্ষাগৃহ, প্রদর্শনী কেন্দ্র, থিয়েটার হল, বিপণি ভবন, চতুর্দিকে দেয়াল দ্বারা আবদ্ধ রেস্টুরেন্ট, পাবলিক টয়লেট, শিশুপার্ক, মেলা বা পাবলিক পরিবহনে আরোহণের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার নির্দিষ্ট সারি, খেলাধুলা ও অনুশীলনের জন্য নির্ধারিত আচ্ছাদিত স্থান, জনসাধারণ কর্তৃক সম্মিলিতভাবে ব্যবহার্য অন্য কোনো স্থান অন্তর্ভুক্ত। আর ‘পাবলিক পরিবহন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ৮ প্রকার যানবাহনকে যার মধ্যে মোটরগাড়ি, বাস, রেলগাড়ি, ট্রাম, জাহাজ, লঞ্চ, যান্ত্রিক সব রকম জনযানবাহন, উড়োজাহাজ অন্তর্ভুক্ত। এসব ‘পাবলিক প্লেসে’ ও ‘পাবলিক পরিবহনে’ ধূমপান করলে অভিযুক্ত ব্যক্তি অনধিক ৩০০ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আইনের ধারা ৮ অনুযায়ী পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনের মালিক বা ব্যবস্থাপককে সংশ্লিষ্ট স্থান বা যানবাহনের এক বা একাধিক জায়গায় ‘ধূমপান হইতে বিরত থাকুন, ইহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ সংবলিত সতর্কতামূলক নোটিশ বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনের এ ধারা লঙ্ঘন করলে অনধিক ১ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আইনের ধারা ৭ক অনুযায়ী প্রতিটি পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনের মালিক বা ব্যবস্থাপককে তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাকে ধূমপানমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে বিধিমালায় উল্লিখিত দায়িত্ব পালন করার কথা বলা হয়েছে। এসবের মধ্যে ধূমপানমুক্ত এলাকায় কোনো ছাইদানি না রাখা, কেউ ধূমপান করলে তাকে বিরত থাকার অনুরোধ করা, অনুরোধ সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তি ধূমপান করলে ওই ব্যক্তিকে ধূমপানমুক্ত এলাকা ত্যাগে বাধ্য করা অথবা সেবা প্রদান হতে বিরত থাকা, প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ অন্যতম। আইনের এ বিধিবিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫০০ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

শেষকথাঃ প্রতিপাদ্য যাই  থাকুক আর বিধিমালা গ্রন্থে, সন্দেহ নেই- ধূমপান জনস্বাস্থের জন্য ঝুঁকির অন্যতম  কারণ। আর ধূমপান না করেও যারা এর শিকার হচ্ছেন- তাদের বাঁচাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ আর সচেতন-শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন। 

তথ্যসূত্রঃ
www.bn.wikipedia.org
www.webmd.com 
www.dainikamadershomoy.com


Friday, May 29, 2015

Feeling

Consider me much cheap a folk
Simple people average!
To me you- the ambrosia
Not a common beverage. 

 

অণু অনুভব

তোমার কাছে সস্তা আমি
ভাবো কেবল 'এভারেজ'
তোমায় তো অমিয় ভাবি
নয়তো কমন বেভারেজ।
-
২৯/৫/১৫

Thursday, May 28, 2015

উচ্চমার্গের সফর



উচ্চমার্গের সফর সামনে
আসছেন ভারত-মোদি,
প্রত্যশার চাপ অনেক বেশি
কষছেন হিসেব বোধি।

যুক্তি হবে চুক্তি হবে
সম্পর্কটা দৃঢ়,
সীমান্ত সব শান্ত থাকুক 
মৃত্যু চাই না ফিরও।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হয়ে
আসছেন যে মমতা,
এবার বুঝি তিস্তা নিয়ে
হবেই সে সমতা।

উঁচুস্তরের এই সফরে
সাধারণ যাক জিতে,
প্রান্তজনের হাসি বাজুক
বিপরীতের হিতে।
--
সো আ প
২৮/৭/১৫ (১১ঃ০৬রা)




নারী

নারী কভু মা কিবা বোন
প্রেয়সী হয় কারো,
জীবন চলার পথে নারী
ছায়া নিবিড় গাঢ়।

হোক সে চাকমা মনিপুরী
হাজং কিংবা গারো,
সে যে মানুষ, দেশের মেয়ে
'না, না' করতে পারো!

নারীর আছে বিদ্যাবুদ্ধি
আছে অধিকারও
বঞ্চিত সে না হয় যেনো
খেয়াল রেখো তারও।


নারীর প্রতি সহিংসতা
অপমানটা ছাড়ো,
হৃদ্য ভালোবাসায় দুয়ে
সমান তালে বাড়ো।
--
সো আ প
২৮/৫/১৫(১০০৫রা)

ভালোবাসার নিপুণ স্থপতি

কোনো পরিযায়ী পাখি নই আমি
বৃহস্পতিতে এলাম
শনিতে ফুড়ুৎ ।

আমি তোমার বারোমাসের আহ্নিকে আছি
উড়েউড়ে
ঘুরেঘুরে
আদরে
অবহেলায়।

তোমার বুকের বাম অলিন্দে
এক টুকরো অনাবাদী জা'গা দিও শুধু
খড়কুটোর সুখাগুনেনীড়
তোমার জন্য আমার অঙ্গীকার
আমি কোনো পরিযায়ী পাখি নই
দিবারাতের প্রহর-অণুতে ভালোবাসার নিপুণ স্থপতি আমি ।
--



Wednesday, May 27, 2015

পরানের কথা ০৩০

ঘটনার পর জোরেশোরে
কমিটি হয় তদন্তে,
ফলাফল যে ক্কচিৎ মেলে
যা জোটে তাও বদ অন্তে।
-
২৭/৩/১৫

ফেবু লাইক কমেন্ট


স্ট্যাটাস আপডেট পেয়েই সবে
লাইক মেরে যায় তড়িৎ,
ইহাই যেনো আসল কর্ম
হতে কর্মা-করিৎ।

সেটা কোনো দুঃখের বিষয়
হোক না মৃত্যু খবর,
বোতাম চেপে লাইকটি দিয়ে
ফেসবুকিংটা জবর!

পুরোটা না পড়েই আবার
কমেন্টে দেয় 'দারুণ'
আসলে তা সত্য তো নয়
মিছেই সামনে বাড়ুন।

শেয়ারটা হয় কালেভদ্রে
ভালোবেসেই হয়তো,
কার্টেসিটা সাথেই থাকে
বন্ধুতাটাই রয়তো।

দেখেবুঝে লাইক কমেন্টে
চর্চাটা হোক ভালো,
মিথ্যে ভালোবাসা নয় আর
সত্য আলো জ্বালো।
--
সো আ প
২৭/৫/১৫ (১১৩০স)

Tuesday, May 26, 2015

লতিফাঃ গণকবর!

কষ্টের উপর জ্বালা হয়ে আসছে ভেসে খবর,
মালয়শিয়ার বনে এবার মিলছে গণকবর।
শতশত কবর কাঁদে নিয়ে লাশের বোঝা,
রোহিঙ্গা না বাংলাদেশি মিছেই এখন খোঁজা।
কে যে দায়ী, নাটেরগুরু থাকেই ধরার বাইরে,
কপালের দোষ দিয়েই কেবল দায় সেড়ে যায় তাইরে!
-
সো আ প
২৬/৫/১৫(১০ঃ৫৫স)

গণকবর !


কষ্টের উপর জ্বালা হয়ে
আসছে ভেসে খবর,
মালয়শিয়ার বনে এবার
মিলছে গণকবর।

শতশত কবর কাঁদে
নিয়ে লাশের বোঝা,
রোহিঙ্গা না বাংলাদেশি
মিছেই এখন খোঁজা।

কে যে দায়ী, নাটেরগুরু
থাকেই ধরার বাইরে,
কপালের দোষ দিয়েই কেবল
দায় সেড়ে যায় তাইরে!
-
সো আ প
২৬/৫/১৫(১০ঃ৫৫স)

Monday, May 25, 2015

মূলতই প্রেমিক আমি

তোমার দেখা  ক্কচিৎ মেলে
ভাগ্যগুণে
কালেভদ্রে গরবিনী পা তোমার
বিলাসে  মাড়িয়ে যায় আমার উঠোন
চকিত চাতক চোখ আমার  তৃষিত নিয়ত
তোমার চলে যাওয়াটুকুই দেখি কেবল
বিষণ্নতার চাষাবাদ  শেষে
মূলতই প্রেমিক আমি
তোমার গায়ের দোলনচাঁপা-গন্ধ আমার বাড়িজুড়ে মোহিত থাকে
কিছু চাইনে আমি আর
ভরাট-যৌবনা পূর্ণিমা-চাঁদ মাসে একবারই দেয় দরশন।
--
সো আ প
২৫/৫/১৫ 

কালবেলা

প্রচণ্ড গরম। হাঁসফাঁস অবস্থা। এতোটুকু স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। কদিন থেকেই শুরু হয়েছে এমন। জ্যৈষ্ঠের খরতাপ বুঝি একেই বলে। বৃষ্টির দেখা নেই। আকাশটা একটু মেঘও করে না। অফিস থেকে বেরিয়ে একটা গরম লু হাওয়ার ধাক্কা খেলো পারু। অফিসে এসি থাকায় তিন-সন্ধ্যের এই ঢাকার খোলা আকাশটাও বড্ড নির্দয় ঠেকে তার কাছে। অফিস থেকে বেরিয়ে পাঁচ মিনিটের মতো অপেক্ষা করতে হয় পারুকে রিকশা পেতে। এতেই ঘেমে একাকার হয়ে যায় সে। দেশটা কি মরুময় হয়ে যাচ্ছে? চরমভাবাপন্ন?- নিজেকেই প্রশ্ন করে মনে মনে পারু। নাকের উপর জমা ঘামবিন্দু ব্যাগে রাখা টিস্যু দিয়ে মোছার চেষ্টা করে সে। হঠাৎ হাসি পেয়ে যায় পারুর। নাকের উপর ঘামলে মেয়েরা নাকি বরের আদুরি হয়। এই প্রচলিত কথা বা অন্য যে কোনো কারণেই হোক- পারুর সংসারটা অসুখী নয়। স্বামী আশিক ব্যস্ত-চাকুরে হয়েও বেশ কেয়ার নেয় পারুর। 'নামকরণ যথার্থ হইয়াছে'- বলা যায় আশিকের ক্ষেত্রে।

আশিককে  নিয়ে টুকরো স্মৃতি মনে পড়ায় একটু জোরেই হেসে ওঠে পারু। হাসির শব্দে পিছনে ফিরে দেখে রিকশাচালক ছেলেটি। একটু অপ্রস্তুত-লজ্জা পায় পারু। কিন্তু তার হাসিটা একেবারে মিইয়ে যায় ভিন্ন কারণে। রিকশাচালক ছেলেটিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করে সে।

বয়স পনেরো-ষোল হতে পারে। শরীরের গড়ন মাঝারি। কালো অপরিপুষ্ট গঠন। কিন্তু মুখটা খুব মায়াভরা। পেছনে তাকানোর সময় পারু ছেলেটির মুখ দেখেছে। একটা বিষন্ন মায়াবী মুখ। পুরো মুখ ঘামে ভেজা। গাল বেয়ে পরছে ঘাম। পারু লক্ষ্য করলো- গায়ের স্যান্ডো গেঞ্জিটা একদম লেপ্টে আছে শরীরে ওর। গেঞ্জিটা অনেক জায়গায় ছেঁড়া। শরীরে ঘামাচিগুলো লাল ফোস্কার মতো হয়ে আছে।

কষ্ট হয় পারুর। জিজ্ঞেস করে সেঃ "এই শরীর নিয়ে তুমি এই গরমে আবার রিকশা চালাচ্ছো, কষ্ট হয় না?"

-" না আফা, আমাগো কষ্ট হইলে ত পেট ভরবো না" - নির্লিপ্ত জবাব ছেলেটির।   

একদম থতমত খেয়ে যায় পারু। কিছু বলতে পারে না সে কিছুক্ষণ। সহসা কোনো গরমবোধ আর  থাকে না পারুর। সত্যিইতো এতোটুকু গরমে হাঁপিয়ে ওঠা পারু নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করে। অফিসে এসির ঠাণ্ডা। বাসায় এসি না থাকলেও মাথার উপর ফ্যান আছে। ফ্রীজের শীতল পানি খাবার ব্যবস্থা আছে। অফিস থেকে পনেরো মিনিটের রিকশা-দূরত্বে বাসা পারুর। এটাও একটা ভাগ্যের ব্যাপার। ঢাকার অসহ্য জ্যামের কবলে পরতে হয় না তাকে।

ছেলেটার সাথে কথা বলতে চেষ্টা করলো পারু।
-"কী নাম তোমার?"
- সোহাগ
-থাকো কোথায়? কার সাথে?
-নামাপাড়া বস্তিতে । মা আর  এক বইন - এই তিনজন আছি এইহানে।

আরো কিছুকথা হলো সোহাগের সাথে। ওদের গ্রামের বাড়ি ছিলো জামালপুরের  ইসলামপুরের বাগান গ্রামে। বাড়িটা অবশ্য নাম মাত্রই ছিলো। ওটা আসলে ছিলো একটা ঘর।  একটি ছোট ছনের ঘর। বাবা দিনমজুরের কাজ করতো। সেই ভোরে বেরিয়ে যেতো। আর ফিরতো সন্ধ্যের পর। বাড়ি ফিরেই খোঁজ নিতো সোহাগের। দুই বোনের পর অনেক আদরের ছিলো এই সোহাগ। বাবা-ই তার নাম রেখেছিলো। সোহাগ। আহা । একরাতে বাবা সফর আলী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড ডায়রিয়া আর জ্বর নিয়ে তিন দিন ভোগে এ পৃথিবী থেকে চলে যায় সফর আলী।

বাবার মৃত্যুর পর সংসার নিয়ে অকুল পাথারে পড়ে সোহাগের মা। তিন জন মানুষের মুখের খাবার যোগানোর চিন্তা শোককেও হার মানিয়ে যায়। সত্যিসত্যি সব চুকিয়ে সফর আলীর মৃত্যুর দুই মাসের মাথায় বাগান গ্রামের দীর্ঘ স্মৃতি পিছে ফেলে ঢাকায় পাড়ি জমাতে হয় তাদের। বাগান গ্রামে পড়ে থাকে দুরন্ত শৈশব, অবারিত সবুজ আর সোহাগের শিক্ষিত হবার স্বপ্ন। বাবার কথায়- মানুষের মতো মানুষ হবার সেই উচ্চাশা!

বড়বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো আগেই। তাই দ্বিতীয় বোন  সাহিদা আর মাকে নিয়ে খিলক্ষেত নামাপাড়ায় বস্তিঘরে ঠাই হয় সোহাগের। আট ক্লাস পড়া সোহাগ ঢাকায় এসে রিকশা চালানোর চেয়ে ভালো কাজ আর পারে নি যোগাড় করতে। কৈশোর  তার থমকে যায় রিকশার প্যাডেলে। এক লাফে বাগান গ্রামের  খেলার কিশোর হঠাৎই দায়িত্বশীল হয়ে যায়। পরিস্থিতি তাকে পরিবারের কর্তা বানিয়ে দেয়!

কথা বলতে বলতে বাসার সামনে এসে যায় পারু। সোহাগের কথা  শুনে একটা প্রস্তাব দেয় পারু সোহাগকে। প্রতিদিন সকালে পারুকে অফিসে পৌঁছে দেয়া আর বিকেলে বাসায় দিয়ে যাওয়া। সোহাগ খুশি-মনে রাজি হয়।

বাসায় ফিরে পারু প্রতিদিনের মতো সাবলীলভাবে কাজর্কম করতে পারলো না। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে লেবুর সরবত - এ গরমে তার পছন্দ। প্রতিদিনই সে করে তা। আজ সে ভুলে গেছে তা। কাপড়  ছেড়ে ফ্রেশ হতেও ভুলে গেছে সে। একটা ঘোর কাজ করে তার মনে। প্রতীজ্ঞা করে- "গরম লাগছে" এরকম বিরক্তি সে কখনো আর প্রকাশ করবে না আর।

ভালোই চলছিলো। প্রতিদিন সকালে অফিসে পৌঁছে দেয়া আর বিকেলে বাসায় ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া। গত একমাসে সোহাগ যেনো   অপরিচিত কেউ নয় আর। পরিবারের সদস্য যেনো একজন। পারু জানে- এটা তার ভাবনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। তবু একটা এমন ছেলের, এমন একটা অসহায় পরিবারের পাশে মনের দিক থেকে থাকতে পেরেও ভালো লাগে পারুর।

এর মধ্যে একদিন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো সোহাগকে পারু। গরমে শরীরের ফোস্কাগুলোর জন্য কিছু ঔষধও কিনে দিয়েছে। বাসায় পড়ে থাকা একটা পুরনো মোবাইল সেট দিয়েছে সে সোহাগকে যোগাযোগের জন্য। খুব খুশী সোহাগ। সোহাগের তার মা ও বোনও খুব খুশী এতে। পারুর ভালো লাগে। কাউকে খুশী করার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ ও শান্তি পাওয়া যায় মনে।

প্রতিদিন সকালে সময় হবার আগেই চলে আসে সোহাগ। একদিনও ব্যতিক্রম হয় নি। কিন্তু আজ বাইরে বেরিয়ে সোহাগকে দেখতে পেলো না পারু। একটু বেখাপ্পা লাগে ব্যাপারটা তার কাছে। অপেক্ষা করে গলির ধারে। কিন্তু না। দেখা নেই সোহাগের।  মোবাইল ফোনে কল দেয় পারু। মোবাইল বন্ধ। বেশ উদ্বেগ কাজ করে পারুর মধ্যে। অন্য একটা রিকশা ডেকে উঠে যায় পারু। যেতে যেতে আরো  কয়েকবার চেষ্টা করে ফোনে। না। সংযোগ পাওয়া গেলো না।

অফিস থেকে এক ঘন্টা আগে ছুটি নেয়  পারু। নামাপাড়া বস্তি হয়ে তারপর বাসায় যাবে সে। বস্তির পরিবেশ অল্পবিস্তর জানা আছে পারুর। সোহাগের দেয়া তথ্য মতো  পৌঁছে যায় সে। কাছাকাছি পৌঁছে টের পেয়ে যায় পারু। একটা ভীষণ চিকন কষ্ট টের পায় সে বুকের ভেতর।
-- গতরাতে আগুনে পোড়ে গেছে বস্তির প্রায় পঁচিশটি ঘর। এর মধ্যে সোহাগদের ঘরও ছিলো।

কিছুই আর ভাবতে পারে না পারু। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। এই বস্তি নিয়ে অনেক রাজনীতি চলে। চলে চাঁদাবাজি। আবার বস্তির\আগুনলাগা নিয়েও থাকে অনেক ষড়যন্ত্র! শিকার শুধু অসহায়রা। রাঘব বোয়াল ঠিক পেয়ে যায় ভাগ। এ এক কঠিন দুষ্টচক্র।

বুকের ব্যথাটা আরো বেশি করে টের পায় পারু। অসহায় লাগে তার। বাসায় ফেরার জন্য পা বাড়ায়। ততক্ষণে সামনে ঘুঁটঘুঁটে  আঁধার!
--
সো আ প
২৫/০৫/১৫










Sunday, May 24, 2015

লতিফাঃ নারী ০২

নারী তো আজ সমান তালে মেধা এবং মননে,
ঘরে সে মমতাময়ী যোগ্যও সে রণনে।

নারীর ভালোবাসার ঋণে সবারই তো দায় আছে,
সেই সে নারীর অপমানে কারোরই সায় আছে?

নারীর কেনো পথেঘাটে থাকেই তবু নিগ্রহ?
কুলাঙ্গার সেই পুরুষ অংশ মানুষ তোরা শীঘ্র হ।

লতিফাঃ নারী-০১

নারী কেবল ভোগ-সামগ্রী- সে কি মানুষ মোটে না?
কেনো তবে তাঁর কপালে প্রাপ্যটুকু জোটে না?

নারী কেবল মানুষ তো নয়- মায়ের চরণ স্বর্গ সে,
তবু কেনো নারীর তরে নিগ্রহ -তা বর্গ সে?

নারী হলো শান্তি-ছায়া জীবন যুঝে রোজই সে,
তবু কেনো জীবনবাজি, হয় যে লোভের ভোজই সে!


মানুষ হ



নারী কেবল ভোগ-সামগ্রী
সে কি মানুষ মোটে না?
কেনো তবে তাঁর কপালে
প্রাপ্যটুকু জোটে না?

নারী কেবল মানুষ তো নয়
মায়ের চরণ স্বর্গ সে,
তবু কেনো নারীর তরে
নিগ্রহ - তা বর্গ সে?

নারী কভু আদরের বোন
কভু প্রাণের সখা সে
কেনো অযাচিত থাবা!
আদর পাখি চখা সে।

নারী হলো শান্তি-ছায়া
জীবন যুঝে রোজই সে,
তবু কেনো জীবনবাজি
হয় যে লোভের ভোজই সে!

নারী তো আজ সমান তালে
মেধা এবং মননে,
ঘরে সে মমতাময়ী
যোগ্যও সে রণনে।

নারীর ভালোবাসার ঋণে
সবারই তো দায় আছে,
সেই সে নারীর অপমানে
কারোরই সায় আছে?

নারীর কেনো পথেঘাটে
থাকেই তবু নিগ্রহ?
কুলাঙ্গার সেই পুরুষ অংশ
মানুষ তোরা শীঘ্র হ। 
-
সো আ প
২৩/৫/১৫










Saturday, May 23, 2015

লিমেরিকঃ গরম যৌতুক

এমন গরমকালে তারে বলা যায়
এমনও তাপদাহে দুপুরও বেলায়
প্রাণশক্তি ঘামে ঝরে
ধুলোয় লুটিয়ে পড়ে
শ্বশুরের  এসি ছাড়া ভালোবাসা দায়।


Friday, May 22, 2015

লতিফাঃ পে-স্কেল ভাবনা

সরকারি সব বেতনভাতা যাচ্ছে দ্বিগুণ বেড়ে,
ছোট বড় চাকুরেগণ উঠছেন কেশেঝেড়ে।

ব্যবসায়ী দোকানী সব হ্যাঁরে রে রে রে  রে
দাম হাঁকাতে লাগাম ছাড়াম 'পায় কে বল আমারে?'

প্রাইভেট জবে আছে যারা উঠছে না আর পেরে,
বাড়িভাড়া আর বাজারদর আসছে যেনো তেড়ে।
-
২১/৫/১৫

লতিফাঃ ঢাকাই ট্রাফিক

স্বয়ংক্রিয় ডিজিটালে চলছে না তো গাড়ি,
সিগন্যালে দাঁড়িয়ে আছে সারির  ওপার সারি।
ভীষণ গরম, যাত্রীসকল ঘেমে-নেয়ে নাকাল,
এক্সপেরিমেন্ট ট্রাফিক রুলের ফলটা বুঝি মাকাল!
ঢাকাই ট্রাফিক করতে সচল একটু মাথা ঘামান,
বুদ্ধি দিয়ে বাঁচান ট্রাফিক, নয় দাগিয়ে কামান।

Thursday, May 21, 2015

পে স্কেল ভাবনা

সরকারি সব বেতনভাতা
যাচ্ছে দ্বিগুণ বেড়ে,
ছোট বড় চাকুরেগণ
ওঠছেন কেশেঝেড়ে।

ব্যবসায়ী দোকানী সব
হ্যাঁরে রে রে রে  রে
দাম হাঁকাতে লাগামছাড়া
'পায় কে বল আমারে?'

বাড়িভাড়াও যাচ্ছে কম না
বাড়ছে মায়া ছেড়ে,
সুযোগবুঝে সেবাখাতও
ঠুকায় পেরেক ফেড়ে।

প্রাইভেট জবে আছে যারা
ওঠছে না আর পেরে,
বাড়িভাড়া আর বাজারদর
আসছে যেনো তেড়ে।

মাথায় কুড়াল বেকার ভাবে
আশা সবি মেরে,
'জীবনচলার কঠিন পথে
পড়েছি কোন ঘেরে!'

সরকারি সব বেতনভাতা
যাচ্ছে দ্বিগুণ বেড়ে,
সমন্বয় যায় কি করা
ভালো্বাসার জেরে?
-
২১/৫/১৫


Wednesday, May 20, 2015

পরানের কথা ০২৯

মিথ্যের বেসাতি এ সময় 
বিকোয় চড়া দামে,
সত্য শুধু পাচার যে হয়
পুরান ডাকের খামে। 


Tuesday, May 19, 2015

ঢাকাই ট্রাফিক



স্বয়ংক্রিয় ডিজিটালে
চলছে না তো গাড়ি,
সিগন্যালে দাঁড়িয়ে আছে
সারির ওপার সারি।

ভীষণ গরম, যাত্রীসকল
ঘেমে-নেয়ে নাকাল,
এক্সপেরিমেন্ট ট্রাফিক রুলের
ফলটা বুঝি মাকাল!

ঢাকাই ট্রাফিক করতে সচল
একটু মাথা ঘামান,
বুদ্ধি দিয়ে বাঁচান ট্রাফিক
নয় দাগিয়ে কামান। 
-
১৯/৫/১৫ 






লিমেরিকঃ মানব-পণ্য

মানুষসকল পণ্য-সম যাচ্ছে হয়ে পাচার!

সাগরবুকে নৌকাফাঁদে কাঁদছে পাখি খাঁচার।
খাদ্য বিনে ওষুধহীনে
মানবতা কার অধীনে!
নাটেরগুরু থাকে বহাল খুঁটি শক্ত চাচার। 
-
১৯/৫/১৫

লতিফাঃ মানব-পণ্য

মানুষসকল পণ্য-সম যাচ্ছে হয়ে পাচার!
সাগরবুকে নৌকাফাঁদে কাঁদছে পাখি খাঁচার।

বড় ছোট নারী পুরুষ প্রাণগুলো সব নাচার,
খাদ্য বিনে ওষুধহীনে মিছে চেষ্টা বাঁচার।

নাটেরগুরু থাকে বহাল খুঁটি শক্ত চাচার,
মানবতা উঠুক জেগে হিংসা আছে যা, ছাড়! 

পরানের কথা ০২৮

মিথ্যে ছাড়া বাকি সবই
আজ ঠেকে যে মিথ্যে
স্মৃতি কিবা স্বপন  তা যে
সত্যে কভু জিততে!

Monday, May 18, 2015

মানব-পণ্য


মানুষসকল পণ্য-সম 
যাচ্ছে হয়ে পাচার!
সাগরবুকে নৌকাফাঁদে
কাঁদছে পাখি খাঁচার।

বড় ছোট নারী পুরুষ
প্রাণগুলো সব নাচার,
খাদ্য বিনে ওষুধহীনে
মিছে চেষ্টা বাঁচার।

নাটেরগুরু থাকে বহাল
খুঁটি শক্ত চাচার,
মানবতা উঠুক জেগে
হিংসা আছে যা, ছাড়!
--
সো আ প
১৮/৫/১৫




Sunday, May 17, 2015

অনুভব

ভালোবাসা সবসময়ের
বসন্ত বা শীত না,
ভাবনা তুমি, তুমি স্বপন
এটা শিবের গীত না।

ভালোবাসা জীবন যেনো
জাদুঘরের মৃৎ না,
মিছেই শুধু বাহাস করে
বাড়িয়ে যায় ফিতনা।

ভালোবাসা সবল সদা
নয় এমন- ‘এ ভিত না’
হিংসা ঘৃণায় জয়ী হওয়া
সেটা কোনো জিত না।

ভালোবাসায় বন্যহন্য
বিপরীতে হিত না?
অনুভবেই যায় যে পাওয়া
এটা কোনো মিথ না। 

Thursday, May 14, 2015

আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসঃ প্রাসঙ্গিকতা ও প্রত্যাশা

পরিবার ও পরিবার দিবসঃ  আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস আজ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৯৯৩ সালে গৃহীত এক প্রস্তাব অনুযায়ী ১৫ মে কে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস ঘোষণা করা হয়।  ১৯৯৪ সালকে আন্তর্জাতিক পরিবার বর্ষও ঘোষণা করেছিল জাতিসংঘগ এবং পরবর্তীতে ১৯৯৫ সাল থেকে সমগ্র বিশ্বে প্রতি বছর এ দিনটি আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পারিবারিক বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ়ীকরণ ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে  মূলত এ দিবস পালনের প্রয়াস নেয়া হয়। ছোটবেলায় পরিবারের সংজ্ঞা শেখা আছে সবারই। মা-বাবা,ভাই-বোন, দাদা-দাদী – সবাইকে নিয়েই গঠন হয় পরিবারের।
সমাজের মৌলিক ভিত্তি হলো  পরিবার। একটি পরিবার একটি প্রতিষ্ঠান। পরিবারেই মানুষ পায় ভবিষ্যৎ জীবনের পথ নির্দেশনা। জীবন আসলে গড়ে ওঠে এখান থেকেই। মানুষের সর্বপ্রথম বিদ্যাপীঠও বলা হয় পরিবারকে। পারষ্পারিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা ও দৃঢ় বন্ধনের মাধ্যমে পরিবারে বেড়ে ওঠা একজন মানুষ সমাজের সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করে থাকে।  পরিবার তাই  মানুষের জন্য  স্বপ্নডাঙ্গা। মানুষের জীবনে পরিবারের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম।

বিশেষজ্ঞদের চোখে পরিবারঃ   সমাজবিজ্ঞানীগণ বিভিন্নভাবে পরিবার ও এর ভুমিকা বিধৃত করেছেন। ম্যালিনোস্কির মতে – “পরিবার হল একটি গোষ্ঠী বা সংগঠন আর বিবাহ হল সন্তান উৎপাদন ও পালনের একটি চুক্তি মাত্র। সামনার ও কেলারের মতে- পরিবার হল ক্ষুদ্র সামাজিক সংগঠন, যা কমপক্ষে দুপুরুষকাল পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে”- এ সংজ্ঞার প্রেক্ষিতে বোঝা যায়, বিবাহপ্রথার আগেও সমাজে পরিবারের সৃষ্টি হয়েছিল- কারণ এ সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার আগে থেকেই মানুষ দলবদ্ধ জীবনযাত্রা করত যা পারিবারিক জীবনযাপনের প্রমাণ বহন করে। 
তবে সমাজ ভেদে, সংস্কৃতিভেদে পরিবারের গঠন, কাঠামো, কার্যক্রম ও সার্বিক ভূমিকা ভিন্ন হয়ে থাকে। সময়ের সাথে, সভ্যতার বিকাশের সাথে আর টেকনোলজির উন্নতির সাথে সাথে সমাজে ও রাষ্ট্রে পরিবাবের ভূমিকা যেমণ পরিবর্তিত হচ্ছে; সাথেসাথে পারিবারিক কাঠামো আর মূল্যবোধেও আসছে ভিন্নতা।

যৌথ পরিবার ভাঙ্গার কারণঃ  অনেক কারণেই যৌথ পরিবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও ক্রমেই কমে কমে বিলুপ্তির পথে এখন। অর্থনৈতিক কারণ এদের মধ্যে অন্যতম। সমাজবিজ্ঞানী ফলসমের মতে  যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার বৃদ্ধির কারণ প্রধানত তিনটিঃ
  • অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও জীবনমানের উন্নতি; 
  • স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই প্রয়োজন ও চাহিদা সম্পর্কে সচেতনতা;
  •  অলাভজনক শিশুশ্রম এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার;
  •  ব্যক্তিত্বের সংঘাত এবং ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদের উন্মেষ। 
পরিবারের গুরুত্বঃ  আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানুষের জীবনে পরিবারের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম।  পরিবারের অনেক মৌলিক কাজ রয়েছে । 
যেমণঃ
  • জৈবিক;
  • মনস্তাত্ত্বিক;
  • অর্থনৈতিক,;
  •  শিক্ষাদান;
  • শিশুর সামাজিকীকরণ;
  • সংস্কৃতির সংরক্ষণ;
  • মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ;
  •  সমমর্যাদার নিশ্চয়তা এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমঅধিকার
  • সামাজিক অগ্রগতি সাধন ও জীবন মান উন্নয়ন।
আজকের শিশু ভবিষ্যতের আগামীর দক্ষ নাগরিক। এই শিশুকে উপযোগী  করে গড়ে তোলে পরিবার । শিশুর মনোজগত প্রস্তুত হয় পরিবারে। পরিবারের ধরন, প্রথা-রীতিনীতি এ সবের ওপর ভিত্তি করে শিশুর জীবন-আচরণ গড়ে ওঠে। তাই চারিত্রিক সদ্ভাব গড়ে তোলা, সাংসারিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা, মিথ্যে না বলা, গুরুজনদের শ্রদ্ধা করা, নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে ফেরা, নিজের কাজ নিজে সম্পন্ন করা, মিথ্যেকে ঘৃণা করা এবং মানবিক মূল্যবোধগুলোর চর্চার মাধ্যমে অন্তরকে বিকশিত করা এবং সর্বোপরি সমাজ ও রাষ্ট্রে নেতৃত্ব দেয়ার মতো গুণাবলী আসলে পরিবারেই গ্রথিত হয়।

 বাস্তবতাঃ
পরিবার - আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কেমন? এটা অস্বীকার করার জো নেই যে, আমাদের দেশেও পরিবারের কাঠামো আগের মতো নেই। সময়, জীবন, জীবিকা, মানসিকতা ও মূল্যবোধের দ্বান্দ্বিক কারণে আমাদের পরিবারগুলো ভেঙ্গে একক পরিবারে রূপ নিচ্ছে। মা-বাবা, ভাই বোন, দাদা দাদি - সবাই মিলে যে সুন্দর পারিবারিক পরিবেশ ছিলো তা হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশঃ। ব্যক্তি-কেন্দ্রিকতা, স্বার্থের দোলাচলে আমরা অনেকেই ভুলে যাই- পরিবারের আপনজনদের কথা। এমনকি বাবা-মায়ের খোঁজও নেয়া হয় না। আমাদের সমাজেও তাই দেখা যায় বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা যাচ্ছে বেড়ে।
এমনকি ছোট পরিবারেও সহনশীলতা আর পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকায় অশান্তি বিরাজ করতে দেখা যায়। এর প্রভাব সরাসরি সংশ্লিষ্ট সদস্যদের ওপর পড়ছে; পাশাপাশি সেই পরিবারের শিশুরা বেড়ে উঠছে বিরূপ পরিবেশে। সুস্থ মানসিক ও মানবিক বোধ গঠন হচ্ছে বাধাগ্রস্থ।
যৌতুককে কেন্দ্র করেও অশান্তি লেগে থাকে অনেক পরিবারে।
পারিবারিক অশান্তির কারণে ঘটছে না না ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। পরিবারে সৌহার্দের  অভাবেসন্তানের হাতে বাবা-মায়ের খুনবড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু বা বৃদ্ধ বাবা-মাকে’ অবহেলার মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে আশঙ্কাজনকভাবে। পারিবারিক অশান্তির জন্য মানুষের মানসিক ও মানবিক বোধের অবক্ষয় হচ্ছে।


সুন্দর পরিবারের জন্য করণীয়ঃ

পারিবারিক সুখ-শান্তি যাতে বিনষ্ট হতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সবাইকে।  ঘর বা পরিবার এক পবিত্র আশ্রয়। সব পাখি দিন শেষে যেমন তার নীড়ে ফিরে আসে  মানুষও সারাদিনের কর্মব্যস্ততার শেষে ঘরে ফিরে  আসে। তবে ঘরে অবশ্যই শান্তি থাকতে হবে। হতে হবে সুইট-হোম পরিবারের মধ্যে ভালোবাসায় ভরপুর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও  সুন্দর পরিবেশ থাকতে হবে। আগে নিজের পরিবারকে ভালোবাসতে হবেতারপর দেশকে ভালোবাসতে হবে। কারণ নিজের পরিবারকে ভালোবাসতে না পারলে নিজের দেশকে ভালোবাসা সম্ভব হবে না। পরিবার শক্তিশালী হলে সমাজ এগিয়ে যাবে আরে দেশ হবে শক্তিশালী।

পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। দুজনের ভূমিকা ও অধিকার হতে  হবে সমান্ ও সম্প্রীতির। অন্যসব সদস্যেরও থাকতে হবে সমান অধিকার।  মর্যাদা হবে যথাযোগ্য। সবার আবেগের মূল্যায়ন করতে হবে  যৌক্তিকভাবে সময়ের নিরিখে।  পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ পরিবারের কাঠামোকে করতে পারে মজবুত।
শত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বের  করে  সবার খোঁজ নেয়া উচিত। পরিবারের সবার সাথে কথা বলা প্রয়োজন। মিথস্ক্রিয়া সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক। মাঝেমধ্যে সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া- ফ্যামিলি ডে আউট - অনেক ফলদায়ক হতে পারে।
পরিবারের জেষ্ঠ্য সদস্যদের সম্মানের চোখে দেখা একান্ত প্রয়োজন। এতোটুকু কথা বা খোঁজ নেয়া অনেক সুন্দর মানবিক প্রভাব ফেলতে পারে তাঁদের মনে।
আত্মীয়-স্বজনকে সমান চোখে দেখা জরুরি। নিজের ভাই-বোন, মা-বাবাকে  অনেকে প্রাধিকার দেয়। পক্ষান্তরে, স্বামী বা স্ত্রীর আত্মীয়কে ভিন্ন চোখে দেখা অনেক পরিবারে অশান্তি ডেকে আনে। 

শেষকথাঃ 
এটা ঠিক যে, শুধু দিবস পালন করে পরিবারকে সুখী বা শান্তিময় করা সম্ভব নয়।  তদুপরি, আমাদের দেশে পরিবার দিবসের পরিচিতিও নেই সেভাবে। তবে একটি সুন্দর পরিবার, সুখী পরিবারের জন্য এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। যার যার স্থান থেকে। কারণ সমাজ বিনির্মাণে আর রাষ্ট্র পরিচালনায় যে সুন্দর মনের যোগ্য ও  দক্ষ মানুষ দরকার - সে মানুষ গড়ে ওঠে পরিবারে। পরিবার সে অর্থে একটি রাষ্ট্রের ক্ষুদ্রতম ইউনিট।
সেই পরিবারের  ভালবাসা ও মমতার বন্ধনে বেঁচে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সাথে  পরিবর্তন হবে অনেক কিছুর; পরিবারেরও।  সেটিই স্বাভাবিক । এরই মাঝে, সবার সচেতন কন্ট্রিবিউশিনের মধ্যদিয়ে পরিবার হয়ে ওঠতে পারে সুখের আধার। কাঙ্ক্ষিত আশ্রয়। শান্তির নীড়। 
==
সো আ প
১৪ মে ২০১৫

Featured Post

কষ্টযাপন

তাদের কষ্টবিলাস থাকে আমার কষ্ট বোধযাপন, আমার রঙের আকাশ দেখে ভাবে তারা উদযাপন। #অণুঅনুভব

জনপ্রিয়