Friday, October 31, 2014

লিমেরিকঃ ঘুড়ি

অই যে এক রঙ্গা এক ঘুড়ি ছিলো না?
সৃষ্টিশীল কাজে তাদের জুড়ি ছিলোনা।
সেই ঘুড়ি আজ উড়ন্ত
ব্লগ আকাশে দুরন্ত
ঘুড়ির পথে কাঁটা বিছানো বুড়ি ছিলো না। 

গন্তব্য

বনানী থেকে গাড়িতে ওঠার পর ফ্লাইওভারের উপরেই মিজান সাহেবের দুই হাত বেঁধে ফেলে তারা। মিজান সাহেব টের পান পাতাফাঁদে পা ফেলেছেন তিনি। বুঝতে পারেন যাত্রী বেশে অপেক্ষমাণ লাইন থেকে তাঁর সাথে অন্য যে দুজন উঠেছেন তারা আসলে সাধারণ যাত্রী না। এ চক্রেরই সদস্য ওরা। খুব অসহায়বোধ করেন মিজান সাহেব। একটা প্রাইভেট কোম্পানির সাপ্লাইচেইনে জব করেন তিনি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ভালোই চেনেন তিনি। আর নানা ছলচাতুরী আর প্রতারণা-ফাঁদের কথা তাঁর অজানা নয়।

মিজান সাহেবের বা পাশে বসা লোকটি বললোঃ
- এই মুখটা বেঁধে ফেল।
- প্লিজ ভাই, আমার মুখ বাঁধবেন না। সেটার কোনো প্রয়োজন নেই। সাথে যা আছে সব নিয়ে যান। চিৎকার চেঁচামেচি করবো না আমি। দয়া করুন ভাই। অনুনয় করে বললেন মিজান সাহেব।

ড্রাইভিং সিটে বসা লোকটি এবার কথা বললোঃ
-এই রাখ। মুখ বাঁধতে হবে না। হি ইজ এ জেন্টলম্যান।
বেশ ভরাট কণ্ঠ। উচ্চারণও সুন্দর। মিজান সাহেব বুঝতে পারলেন- এই লোকটি এদের লীডার। এতো চাপের মধ্যেও মনেমনে ম্লান হাসলেন মিজান সাহেব। লীডার শব্দটি এখানেও প্রযোজ্য হচ্ছে! সত্যি আমাদের জীবনযাত্রা বড়ো অদ্ভুত।
ডানপাশে বসা লোকটি মিজান সাহেবের পকেটসহ সারা শরীর সার্চ করে যাচ্ছে। এ লোকটি গাট্টাগোট্টা টাইপের। একটু নির্দয়ভাবেই মিজান সাহেবকে এদিক সেদিক ধাক্কা দিয়ে, তার সুবিধামতো সব বের করে নিচ্ছে। 

-লীডার, নগদ টাকা আট হাজার তিনশ' পঞ্চাশ, দুইটা এটিএম কার্ড, দুটা মোবাইল...

গাট্টাগোট্টা লোকটা জানালো ড্রাইভিং-এর লীডারকে। টয়োটা করলা গাড়িটি তখন ফ্লাইওভার পেরিয়ে মিরপুরের দিকে ইসিবি চত্বর ক্রস করছে।
- কার্ডের পাসওয়ার্ডগুলো তাড়াতাড়ি নে বেটা।
চাপা চেঁচানো কন্ঠ লীডারের।
ব্র্যাক ব্যাংকের কার্ডের পাসওয়ার্ড মনে ছিলো মিজান সাহেবের। দিয়ে দিলো তা। কিন্তু ব্যাংক এশিয়ার কার্ডের পাসটা মনে নেই তাঁর। খেঁকিয়ে উঠলো ডানপাশে বসা লালচোখা লোকটিঃ
- ভাওতাভাজি করার চেষ্টা করবা না মিয়া। সাইজ করার অনেক মাল-মশলা আছে আমাদের কাছে। বলেই প্যান্টের পকেটে হাত দেয় সে।
- আমি সত্যি বলছি ভাই, আমার মনে নেই। তবে আমার অফিসের ড্রয়ারে একটা নোটে লেখা আছে।
কাঁদোকাঁদো তখন মিজান সাহেব।
-ফোন করো। ফোনে জেনে আমাদের জানাও।

ভাবনায় পড়ে যায় মিজান সাহেব। অফিস এখন বন্ধ । এডমিনের অনুমতি ছাড়া এখন অফিস খোলা যাবে না। এডমিন হেডকে ফোন করেন তিনি। হাত বাঁধা অবস্থাতেই। ভাগ্যিস হাতদুটি পেছনে বাঁধেনি তাঁর। ফোনে তিনি জানান, তাঁর ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছে । টাকার জরুরি প্রয়োজন। কার্ডের পাসওয়ার্ড পেতে তিনি এডমিনের হেল্প চান। এডমিন প্রধান বিপদের কথা জানতে পেরে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। পাসওয়ার্ড মোবাইল ফোনে জানানো হয় তাঁকে এক ঘণ্টার মধ্যে ।

গাড়ি ততক্ষণে মিরপুর ঘুরে উত্তরা এলাকা চক্কর দিচ্ছে। গলা শুকিয়ে আসে মিজান সাহেবের। অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি সাড়ে ছটায়। গ্রীন টি খেয়ে বেরিয়েছিলেন তখন। অফিসের পিক-ড্রপের গাড়িটি ব্রেকের সমস্যা হওয়ায় আজ বিকেলে গাড়ি ছিলো না। বনানীর কাকলী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। উত্তরাতে বাসা তাঁর। জানতেন তিনি, এসব প্রাইভেট গাড়িতে উঠা রিস্কি। কিন্তু লাইনে তাঁর পাশে থাকা আরো দুজন উঠায় তিনি সাহস পান। বুঝতে পারেননি - এ লোকগুলোর ছক। এদের বয়স সবার ত্রিশের নিচে হবে- ঠাউর করেন মিজান সাহেব।

উত্তরায় দুটি বুথ থেকে তারা একাঊন্টের সব টাকা তুলে নেয়। তারপর, গাড়ি চলে আশুলিয়ার দিকে। মিজান সাহেকে তিনশ' টাকা ফেরত দেয় তারা। সাথে পুরাতন মোবাইলটিও। এটিএম কার্ড দুটিও দিয়ে দেয়। 

আশুলিয়া হাইওয়ের পাশে গাড়ি থামে। মিজান সাহেবকে নামিয়ে দিয়ে হাইস্পীডে গাড়ি নিমিষে মিলিয়ে যায়। হয়তো তাদের গন্তব্যে।

মিজান সাহেব ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। ভাবতে থাকেন- কোথায় যাচ্ছি আমরা? কোথায় যাচ্ছে আমাদের সমাজ? আমাদের যুব সমাজ? কোথায় নিরাপত্তা জীবনের? আমাদের গন্তব্য কি আঁধারে?
একটা ট্রাকের হাইড্রলিক হর্নের শব্দে তিনি সম্বিত ফিরে পান। বাসায় ফিরতে হবে তাঁকে।






Tuesday, October 28, 2014

অনাড়ম্বর তুমি


অনাড়ম্বর তোমাকে বেশি ভালো লাগে
দূর্বাঘাসে হেমন্তশিশির যেনো তুমি
পল্লবিত আমার বুকের জমিনে।

প্রসাধনীর প্রলেপ নেই
স্বরূপে উদ্ভাসিত তোমার হিরণ্ময় রূপাবয়ব
বিদেশি সুগন্ধি ছোঁয়নি তোমায় আজ
শরীরজুড়ে তোমার
দোলনচাঁপার সৌরভ।

আমি থমকে যাই
সামনে এগোতে ভয় হয় আমার
বলতে পারি না অন্যদের মতো
- তুমি সুন্দর
ভেতর বাড়ি আন্দোলিত হয় আমার
আমি ক্রমশ আরো বেশি ভালোবাসি তোমায়।

অনাড়ম্বর তোমাকে বেশি ভালো লাগে
নাইবা জানলে তুমি তা।
##২০১৪১০২৭##



Monday, October 20, 2014

লিমেরিকঃ প্রতিরোধ চাই



সড়ক দুর্ঘটনায় আহা মরছে মানুষ রোজই
হারানো জীবনের হায় রাখছে না কেউ খোঁজই
মানবজীবন এ যেনো নয়
পতঙ্গ-সম তা গোনা হয়
প্রতিরোধের ব্যবস্থাটা জরুরি তো আজই।
##২০১৪১০২০(১৩৭)##
ছবিঃ বিডিনিউজ২৪ডটকম

অণুগল্পঃ দেয়াল

হাসপাতালের এই ছোট্ট ক্যাবিনে অনেকদিন হয়ে গেলো অদৃজার। সাদা চাদরে ঢাকা বিছানা। পাশে ছোট একটা টেবিল। তিনটি চেয়ার। দেয়াল ও ছাদের রঙটাও সাদা। একটা সিলিং ফ্যান ঝুলছে। খুব একটা চালানো হয় না তা। একটা পুরনো এসি লাগানো উত্তর দেয়ালে। কিছুক্ষণ পরপর গড়গড় করে চালু হয়ে যায় । প্রথম প্রথম শব্দটা খারাপ লাগলেও এখন তা পরিচিত ও আপন বলে মনে হয় অদৃজার। এটা কি মায়া? পাশাপাশি থাকতে থাকতে জড়িয়ে ধরা মায়া।

কাল এ ঘরের বাইরে যাবে অদৃজা। আহা মুক্তি!  পায়ের কাছে চেয়ারটায় মা এখনো বসা। চোখে চোখ পড়লেই মা হাসেন। মায়ের হাসিটা যেনো কেমন। ঠিক আগের মতো না। এগিয়ে এসে মা অদৃজার মাথায় হাত রাখে। কী যে মধুর লাগে মায়ের হাতের স্পর্শ । একসময় ঘুমিয়ে পড়ে অদৃজা।

ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যায় অদৃজার। মাকে সে পায়ের কাছের চেয়ারটাতেই বসে থাকতে দেখে। চোখে চোখ পড়তেই হাসার চেষ্টা করে দু'জনই। মায়ের জন্য জন্য খুব কষ্ট বোধ করে অদৃজা। অদৃজা জানে মরণব্যাধি লিম্ফোমা যে পর্যায়ে বাসা গেড়েছে তাতে বাঁচার সম্ভাবনা তার একহাজার ভাগের এক ভাগ।

অপারেশন থিয়েটার রেডি। একজন নার্স এসে সযতনে ট্রলিতে শুইয়ে দেয় অদৃজাকে। মা এসে সর্বাঙ্গে জড়িয়ে ধরে তাকে। কপালে চুমু  খায়। ঠোঁটের হাসি তার ভিজে যায় ক'ফোটা চোখের পানিতে। দরোজায় মাকে আটকে দেয় নার্স।

অপারশন থিয়েটার  রুমটাকে খুব ঠাণ্ডা  ঠেকে অদৃজার কাছে। এপ্রন-গ্লাভস পরা ডাক্তার এগিয়ে আসে অদৃজার কাছে। রুমের ছাদটা মনে হয় অনেকটা নিচে নেমে এসেছে। পাশে দেখার চেষ্টা করে অদৃজা। সাদা দেয়াল ছাড়া সে কিছুই দেখতে পায় না।
                                                     *********************






Sunday, October 19, 2014

পরানের কথা ০২০

প্রতিশ্রুতির তুবড়ি মুখে
কাজের বেলায় উল্টোরথ,
যতন করে গোছায় শুধু
নিজের ভূত ও ভবিষ্যৎ।
##২০১৪১০১৯##

Thursday, October 16, 2014

স্বপ্ন যদি সত্যি হতো

হঠাৎ  ঘুম ভেঙ্গে যায় টুনির। রাত দুপুরে। একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখছিল সে। এ বাড়ির বেগম সাহেবা, যাকে সে খালাম্মা বলে ডাকে, তিনি তাকে আদর করছেন। ভালোভাবে কথা বলছেন টুনির সাথে। কাজের শেষে তিনি তাকে পড়াচ্ছেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।

স্বপ্নটা ভেঙ্গে গেলো। অতো ভালো একটা স্বপ্ন। সে আবার ঘুমোতে চেষ্টা করে। কিন্তু ঘুম আর আসে না।

নাম তার টুনি। তবে এ বাড়ির মানুষজন মাঝেমধ্যে তাকে টুইন্যা বলে ডাকে। সে অবশ্য রাগ করে না এজন্য।

ছ' থেকে এগারো। পাঁচ পাচটি বছর। এ পাঁচটি বছর এ বাড়িতে কেটেছে টুনির। মায়ের কথা তার মনে পড়ে। মনে পড়ে তার মা বাড়ি বাড়ি কাজ করতো। ফিরতো সেই সন্ধ্যায়-- তিন-সন্ধ্যের সময়। ফিরেই কত্তো আদর করতো টুনিকে। বুকে জড়িয়ে রাখতো। চুমু খেতো। রাতে কিচ্ছা শুনাতো। কাঠুরিয়ার মেয়ে আর রাজপুত্তরের কিচ্ছা-" এক দ্যাশে আছিলো এক কাঠুইরা। তার আছিলো এক মাইয়া। খুবই সোন্দর। একদিন এক রাজপুত্তর বনে শিকার করতে আইস্যা তারে দেইখ্যা বিয়া কইরা নিয়া যাইবার চাইলো...........।"  এ পর্যন্ত শুনেই ঘুমিয়ে পড়তো টুনি। বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হলো কি না, আজো তার জানা হয়নি।

একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পাশ ফিরে শোয় টুনি। একদিন তিন-সন্ধ্যে পেরিয়ে যাচ্ছিলো। মা তবু ফিরছিলো না। অন্ধকার হয়ে গেলো। মা তবু এলো না। তার বাবা দিন-মজুরের কাজ করতো। সেও সেদিন আসছিলো না। রাগ করে টুনি বৃদ্ধা দাদির ঘরে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লো। কিছু খেলো না সে।

সে রাতে টুনির মা ঠিকই এসেছিলো। এসেছিলো লাশ হয়ে। তাদের গাঁয়ের মধ্য দিয়ে একটা সড়ক ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ চলে গেছে। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় একটা ট্রাক এসে আচমকা.........। একটা চাপা চিৎকার ছাড়া টুনির মায়ের বেশি কিছু করার ছিলো না। রাতেই টুনির মাকে দাফন করা হয়।

পরদিন সকালে উঠে টুনি জানতে চেয়েছিলো তার মায়ের কথা। সবাই তাকে তাকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছিলো। বলেছিলো তার মা তার খালার বাড়িতে থেকে কয়েকদিন কাজ করবে। আসার সময় টুনির পুতুলের জন্য শাড়ি নিয়ে আসবে। কথা শুনে প্রতিবাদ করেনি টুনি। কারণ একটা ভালো শাড়ির জন্য তার পুতুলটাকে রুমার পুতুলের সাথে বিয়ে দেয়া যাচ্ছিলো না।

কিছুদিন পরে লাল শাড়ি-পরা একজন মহিলা এলো তাদের বাড়ি। টুনিদের ঘরেই থাকে। প্রথম প্রথম চিনতো না টুনি। বাড়ির লোকেরা বলে দিলো- এ মহিলা তার মা। নতুন মা। সেদিনই টুনি বুঝে নিয়েছিলো তার মা আর আসবে না কোনোদিন। নতুন মাকে টুনি মা বলে ডাকলো না।

কেউ যখন বাড়ি না থাকতো, ভারি ভারি কিল পড়তো টুনির পিঠে। নতুন মা তাকে মারতো। বকতো। দোষ দেখিয়ে টুনির বাবার কাছে নালিশ জানাতো। বাবাটাও যেনো কেমন হয়ে গেছিলো। কিচ্ছুটি বলতো না। মাঝেমধ্যে মারতো টুনিকেই। নিজেও কাঁদতো নীরবে।

এক মহিলাকে ধরে ঢাকার এ বাড়িতে টুনির কাজের ব্যবস্থা করা হলো। সেদিন বাবাকে ছেড়ে আসতে বড় কষ্ট হয়েছিলো টুনির।

বাড়ির বেগম সাহেবা তাকে সারাদিনই এটাওটা নিয়ে মেজাজ দেখান। কিলটি, চড়টি মারেন। লাথিও বসান মাঝেমধ্যে। ঊনিশ থেকে বিশ হবার জো নেই। বেগম সাহেবার ছেলেমেয়েরা পড়ে। স্কুল- কলেজে না কোথায় যেনো যায় রোজ। এসব টুনি বুঝে না। সে তো আর যায়নি কোনোদিন। তবে মা তাকে বলতো, "আমার টুনিরে আমি ইস্কুলে পড়াইয়াম।"  সেসব কথা আজ আর মনে করতে চায় না টুনি।

একদিন এ বাড়ির লিজা আপাকে দুধ গরম করে একটু দেরি হয়েছিলো বলে  যা একটা চড় বসিয়েছিলো টুনির কচি গালটায়।

ঘুম আর হলো না সে রাতে টুনির। ভাবলো সে-- আজকের স্বপ্নটা যদি সত্যি হতো! যদি সবাই তাকে ভালোবাসতো। আদর করতো। তাহলে সে আরো বেশি কাজ করতে পারতো। কততো ভালোই না হতো তাহলে।

মেঝের উপর এপাশ-ওপাশ করতে করতে ভোর হয়ে গেলো। মসজিদ থেকে আযান শোনা গেলো। তাড়াতাড়ি উঠে পড়লো টুনি। তার এখন অনেক কাজ... ।


পাদটীকাঃ ছোটদের দিন আজ। তাই আমার কৈশোরে লেখা এই গল্পটি শেয়ার করলাম। গল্পটি দৈনিক আজাদ-এ ০৫/১১/১৯৮৯ (কার্তিক ২১, ১৩৯৬ বাংলা) তারিখে প্রকাশিত।

Wednesday, October 15, 2014

ভিখিরির হাত

আকাশে আজ ভরাট-যৌবনা চাঁদ
চারদিকে জোছনার
কী ভীষণ-রকম মাতামাতি
আমিও প্রেমিক হলাম
ছাদে বসে তোমাকে ভাবছি আমি
তোমার সাথে প্রথম দেখা---
একটা দুটো অসংলগ্ন কথা
এবং অবশেষে মধ্য-বয়েসী এক রাতে
আমার হলে তুমি
আমারই।

এতোসব ভাবনার ফাঁকে
চাঁদটাকে আর একবার দেখে নেয়ার লোভ হলো খুব
কিন্তু কই? চাঁদটা লাপাত্তা
সলজ্জ হাসছো তুমি ওর জা'গায় বসে।
-- বিশ্বাস করো কথা
মুহূর্তে আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রেমিক হলাম।

হাত বাড়িয়ে ডাকলাম তোমায়
কী যে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলে তুমি
মুহূর্তে ভিখিরির হাত হলো
আমার প্রসারিত বাহু।

রচনাকালঃ ০৬/০৯/১৯৯২
স্থানঃ পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম। 

Monday, October 13, 2014

লিমেরিকঃ মান-এর মান

পণ্য ও সেবার মানে আমরা আছি কোনখানে?
ভেজাল খেয়ে, ভেজাল পেয়ে জানে তা প্রাণ জানে।
ঔষধ ও খাদ্যে গরল
সেবাখাতও নয় যে সরল
আল্লাহমালুম কী যে আছে এসব মান-এর মানে।

পাদটীকাঃ পণ্য ও সেবার মান নিশ্চিতকরণে ১৪ অক্টোবর  পালিত হচ্ছে বিশ্ব মান দিবস
##২০১৪১০১৩(১৩৫)##

লিমেরিকঃ মুক্তিযোদ্ধা-সনদ জালিয়াতি




মুক্তিযোদ্ধা-সনদ নিয়ে চলে আজো জালিয়াতির জাল
জড়িয়ে থাকে রুই-কাতলাসব, মননে অশুভ চাল
লজ্জা লাগে বড়ো
এ অন্যায় গুরুতরো
কবে হবো শুদ্ধ আমরা? নাকি এভাবেই চিরকাল?
## ২০১৪১০১৩(১৩৬)##

Wednesday, October 8, 2014

কারণ-অকারণের ফাঁদে অণুগুছ



(১)............
অকারণটা বুঝি
কারণটা বুঝি না
কারণে অকারণে
তাই আমি যুঝি না।

 (২)...........................
প্রেম দেখে, বিরহ দেখে
কেনো অকারণ কষ্ট পায় আফসানা
কারণ অকারণ যাই হোক না
প্রেম বড় তা তো সাফ জানা।

 (৩)........................
এক সুতোয় বাধা হলে
কষ্ট পাবার কারণ আছে
অকারণে প্রিয়জনে
কষ্ট দেয়া বারণ আছে




(৪).....................
কারণ আছে কারণ
বলতে কেবল বারণ
ভালোবাসাই আনছে টেনে
করছে হৃদে ধারণ।

(৫).............................................
অকারণে মিসকল দিয়ে সে যে ক্ষান্ত
কারণে খুঁজেছি তারে, যদি তা সে জানতো!
কারণে-অকারণে সবই তাই ভ্রান্ত।

(৬).....................
ভালোবাসি তারে
কারণে অকারণে
ভালোবাসি তারে
ধারণে ও বারণে।

(৭)
ভুলে যাবে সকারণ?
যাও তবে,
ভালোবেসো অকারণ
তাই রবে।

(৮).................................
কী কারণে সে ভেবেছিলো আমি তার
জানি না আমি তা
কেনো অকারণে সে ঘুরে যেতো আমার উঠোন
আমি তা বুঝি আজ।

লিমেরিক: ভাষাসৈনিককে শ্রদ্ধা



ভাষা-সৈনিক ভাষা মতিন চলে গেলেন, আর নাই
ভাষার জন্য ভালোবাসায় তাঁর অনন্য দৃষ্টান্ত  পাই
ভাষার তরে লড়ে 
গড়েছেন আপন করে
মহান এ ভাষাপ্রেমীকে হৃদ্য শ্রদ্ধা আজ জানাই । 
##২৯১৪১০০৮(১৩৪)##

Monday, October 6, 2014

লিমেরিকঃ ত্যাগের শিক্ষা

ত্যাগ-মহিমায় উজ্জ্বল হোক কোরবানির এ ঈদ
গর্ব-চূর্ণ যাক হয়ে যাক ভাঙ্গুক ভুলের নিদ
টাকার মূল্যে নিরূপণ নয়
ভালোবাসার হোক শুধু জয়
কাঙালকে আজ আপন করে জাগুক তবে হৃদ ।
##২০১৪১০০৬(১৩৩)##

Featured Post

কষ্টযাপন

তাদের কষ্টবিলাস থাকে আমার কষ্ট বোধযাপন, আমার রঙের আকাশ দেখে ভাবে তারা উদযাপন। #অণুঅনুভব

জনপ্রিয়