Saturday, April 22, 2017

ফ্রীল্যান্সিং সহজ কিংবা অসম্ভব নয়ঃ অভিজ্ঞতার আলোকে টিপস (পর্ব -৫)

 

 

 ফ্রীল্যান্সিং।
অনলাইনে কাজ।
অনলাইনে আয়।
- এসব কি খুব সহজ? এসবই  কি রাতারাতি অর্থ উপার্জনের পথ? কিছু বিজ্ঞাপন আর কিছু হিডেন প্রলোভন দেখে তাই মনে হয়। ভাবটা এমন- ডলার যেনো নাকের ডগায়। ধরুন আর পকেটে ভরুন।

কিন্তু আসলে কি তাই? না।
নট রিয়েলি!

কিন্তু এটা সত্য যে, অনলাইনে আয় কিংবা ফ্রীল্যান্সিং করে উপার্জন - অসম্ভব নয়। এমনকি নিয়মিত অনেক জব করার চেয়ে অনেকক্ষেত্রে ভালো হতে পারে

প্রশ্ন হলো- কীভাবে?

গত চার পর্বে আলোচনা করেছিঃ
(১)  নিজেকে জানুন- ঠিক/যাচাই করুন কীসে আপনি ভালো!
(২) মার্কেটপ্লেস বেছে নিন এবং প্রোফাইল তৈরি করুন
(৩) মার্কেটপ্লেসে আপনার প্রথম কাজ  | কীভাবে পাবেন? 

(৪) কাভার লেটার কী? কীভাবে লিখবেন কাভার লেটার?
এই ধারাবাহিকতায় আজকের আলোচ্য বিষয়,  একটি সফল প্রজেক্টের জন্য কীভাবে এপ্লাই করবেন। চলুন শুরু করা যাক।

পর্ব-৫ঃ সফল প্রজেক্ট/জবঃ কীভাবে বিড করবেন?

 নূতন কোনো প্রজেক্ট বা জব পেতে আপনাকে যথেষ্ট আগ্রহী থাকতে হবে। তার মানে কিন্তু এই নয় আপনি প্রতিটি জবে বিড করবেন! আপনাকে হতে অনেক সিলেক্টিভ আর ফোকাস করতে হবে এমনসব জবকে যা আপনি খুব ভালোভাবে করতে পারবেন। ঠিক  সময়ে সম্পন্ন করতে পারবেন। 

জবে বিড  বিষয়ক টিপসঃ  

  • জবটি ভালোভাবে বোঝাঃ 

    জবপোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন। নিশ্চিত হোন- প্রজেক্টটির স্কোপ আপনি ভালো করে জানেন আর কাজটি করতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা বা স্কীলসেট আপনার আছে। কাজটির জন্য দরকারি স্কিলস কি আপনার স্কিলসের সাথে মিলে যাচ্ছে? তাহলে ঠিক আছে। 

  • আপনার সময় ও শিডিউল দেখে নিনঃ 
 কাজটি শেষ করার ডেডলাইন দেখে নিন। আপনার ওয়ার্ক-শিডিউল (আগের কাজ ও ব্যক্তিগত কমিট্মেন্ট) রেখে এই কাজটি ঠিক সময়ে শেষ করতে পারবেন কি না ভেবে নিন। প্ল্যান করুন।
  •  আপনি কেনো যোগ্যতম তা নির্নয় করুনঃ
    আপনি কাজটি করতে পারবেন- এটিই যথেষ্ট নয়। আপনার ক্লায়েন্টকে বুঝাতে হবে কেনো এবং কীভাবে আপনিই এই কাজের জন্য যোগ্য। আপনার প্রোফাইল এবং কাভার লেটার তা তোলে ধরবে। আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা  আলোকে প্রফেশনাল কাভার লেটারে আপনার "রাইট ফিট" তোলে ধরুন। 

    আপনার ক্লায়েন্টকে স্ক্রীন করুনঃ 

    ধরুন আপনি ইন্টারভিউ কল পেয়েছেন। ক্লায়েন্ট যখন আপনার ইন্টারভিউ নেয়, খুব সতর্ক থাকুন। মনে রাখবেন, আপনিও আপনার পক্ষ থেকে তাঁকে ইন্টারভিউ করছেন। বুঝে নিন, তিনি আসলে কী চাচ্ছেন। যদি আপনি ফিল করেন, কাজটি আপনার স্কিলের সাথে ঠিকভাবে ম্যাচ করছে না, তাহলে সেই প্রজেক্ট না নেয়াই উত্তম।

    আপনার সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা করুনঃ 

    দিনের সময়কে আপনার কাজের সাথে মিলিয়ে, এই কাজের জন্য সময় এমনভাবে বরাদ্দ করুন যাতে কাজটি ঠিক সময়ে শেষ করতে পারেন। মনে রাখবেন।  ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 


    এতো গেলো প্রজেক্ট শুরুর আগের ব্যাপারস্যাপার। আগামিপর্বে কীভাবে একটি প্রজেক্ট শুরু করা উচিত, সে বিষয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে রলো।


    পাদটীকাঃ আমি কোনো বিশেষজ্ঞ নই। একজন ফ্রীল্যান্সার মাত্র। আপওয়ার্ক  ব্লগ অনুসরণ ও নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এ লেখা। শুধু নতুনদের কিঞ্চিৎ ধারণা দেয়ার জন্যই আমার এ প্রয়াস।


Saturday, April 8, 2017

ফ্রীল্যান্সিং সহজ কিংবা অসম্ভব নয়ঃ অভিজ্ঞতার আলোকে টিপস (পর্ব -৪)


ফ্রীল্যান্সিং।
অনলাইনে কাজ।
অনলাইনে আয়।
- এসব কি খুব সহজ? এসবই  কি রাতারাতি অর্থ উপার্জনের পথ? কিছু বিজ্ঞাপন আর কিছু হিডেন প্রলোভন দেখে তাই মনে হয়। ভাবটা এমন- ডলার যেনো নাকের ডগায়। ধরুন আর পকেটে ভরুন।

কিন্তু আসলে কি তাই? না।
নট রিয়েলি!

কিন্তু এটা সত্য যে, অনলাইনে আয় কিংবা ফ্রীল্যান্সিং করে উপার্জন - অসম্ভব নয়। এমনকি নিয়মিত অনেক জব করার চেয়ে অনেকক্ষেত্রে ভালো হতে পারে।

প্রশ্ন হলো- কীভাবে?

গত তিন পর্বে আলোচনা করেছিঃ
(১)  নিজেকে জানুন- ঠিক/যাচাই করুন কীসে আপনি ভালো!
(২) মার্কেটপ্লেস বেছে নিন এবং প্রোফাইল তৈরি করুন
(৩) মার্কেটপ্লেসে আপনার প্রথম কাজ  | কীভাবে পাবেন? 

এই ধারাবাহিকতায় আজকের আলোচ্য বিষয়, কাভার লেটার নিয়ে। চলুন শুরু করা যাক।

পর্ব-৪ঃ  কাভার লেটার কী? কীভাবে লিখবেন কাভার লেটার?

 কাভার লেটার (Cover Letter) হলো কোনো জবের জন্য আবেদনপত্র। সাধারণভাবে, আমরা তাই বলতে পারি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটি এর চেয়ে বেশিকিছু। কাভার লেটার হলো- আপনার প্রথম এবং সম্ভবত একমাত্র উপায় যা দিয়ে আপনি আপনার পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেন। অন্য অর্থে,মন জয় করে নিতে পারেন তার। আপনার কাভার লেটারে কী ফোটে ওঠে জানেন?
ওঠে আসে আপনারঃ
  • অভিজ্ঞতা
  • ব্যক্তিত্ব
  • আগ্রহ
কীভাবে লিখবেন আপনার কাঙ্খিত জবের জন্য সুন্দর কাভার লেটার? 

(০) পড়ুন > আবার পড়ুনঃ 

আপনার কাভার লেটার শুরু করার আগে জব পোস্টটি পড়ুন। প্রথম থেকে শেষ- সবকিছু। আবার পড়ুন। প্রয়োজন হলে আবার। নোট করুন মেইন পয়েন্টগুলো। 

(১) শুরুটা হবে আন্তরিকভাবে প্রফেশনালঃ
মনে রাখবেন, যিনি প্রথম আপনার কাভার লেটার পড়ছেন, তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারা গুরুত্বপূর্ণ। সম্বোধন করুন আন্তরিকভাবে এবং পেশাদারিত্বের সাথে। নাম জানা থাকলেঃ 
Dear Mr. Christopher
Dear Dena

এভাবে শুরু করতে পারেন। নাম জানা না থাকলে Dear Hiring Manager বা  Hi বলেও শুরু করতে পারেন। ক্লায়েন্টের সময় বুঝে গ্রিটিংস করুন। (Good Morning/Afternoon/Evening).

[ক্লায়েন্টের নাম জানার টিপসঃ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জবপোস্টের সাথে নাম দেয়া থাকে না। সেক্ষেত্রে আপনি ক্লায়েটের প্রোফাইলে প্রাপ্ত ফিডব্যাক থেকে অনেক সময় পেয়ে যেতে পারেন তা।]

(২) মূল পয়েন্টে থাকুনঃ 
আপনার জীবন বৃত্তান্ত জানতে কিন্তু কোনো ক্লায়েন্টই আগ্রহী নন। এতো সময়ও নেই কারো। আগের নোট করা মেইন পয়েন্টগুওলো দেখে আপনি ক্লায়েন্টকে বুঝাতে চেষ্টা করুন- আপনার প্রয়োজনীয় স্কিলস আর অভিজ্ঞতা আছে। এটাই মূলকথা।

(৩) স্কিল হাইলাইটিংঃ
 বেশির ভাগ জবপোস্টেই কিছু বিশেষ দক্ষতা চায় কিংবা কিছু স্কিল উল্লেখ করে দেয় যা অবশ্যই থাকতে হবে। আপনি আপনার কাভার লেটারে বিশেষভাবে তা মেনশন করে দিবেন। এটি আপনার প্রতি ক্লায়েটের আস্থা বাড়াবে।

(৪) নির্দেশনার সঠিক অনুসরণঃ
কিছু ক্লায়েন্ট জবপোস্টে স্পেসিফিক কিছু নির্দেশনা দিয়ে  থাকেন। যেমনঃ তিনটি জোড়া সংখ্যা দিয়ে শুরু অথবা নির্দিষ্ট কোনো শব্দ বা বাক্য উল্লেখ করে দেন যা কাভার লেটারের কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে দিতে হবে। এগুলো করা হয় আপনি পুরো জবপোস্ট মনযোগ দিয়ে পড়েছেন তা নিশ্চিত করতে এবং কাভার লেটার কপি পেস্ট থেকে বিরত রাখতে। 

(৫) নিজেকে সতর্কভাবে উপস্থাপনঃ 
শেষের দিকে, আপনি উল্লেখ করতে পারেন- সপ্তাহে  কতো ঘন্টা আপনি ক্লায়েন্টের জন্য কাজ করতে পারবেন। রাতে কাজ করতে কোনো অসুবিধা আছে কিনা। আমন্ত্রণ জানাতে পারেন আরো কিছু জানার থাকলে আপনি প্রস্তুত আছেন তা জানাতে।

(৬) পড়ুন, এডিট করুন আর আরেকবার ভাবুনঃ

 কাভার লেটার লেখা শেষ! সেন্ড বাটন প্রেস করার জন্য পাগল হয়ে যাবেন না। প্রথম থেকে পড়ুন। টুকটাক কিছু ভুল পেয়ে যাবেন। ঠিক করুন। কিছু বিষয় সাজিয়ে লেখতে ইচ্ছে করবে। করুন। তারপর আবার প্রথম থেকে শেষ অবধি পড়ুন। নাউ সেন্ড!!


কিছু সংক্ষিপ্ত টিপসঃ

  • আপনার কাভারলেটারের প্রথম দুলাইনে  ফোকাস পয়েন্টগুলো রাখার চেষ্টা করুন। 
  • ক্লায়েন্ট মেটা ডেসক্রিপশন আকারে প্রথম দুলাইন (১৬০ ক্যারেক্টার) দেখতে পান এবং তাতে মনে ধরলে ক্লিক করে ডিটেইলস পড়েন। 
  • জেনেরিক কথাবার্তা না লিখে রিলেভেন্ট কথা উল্লেখ করুন।
  • জব সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন যা জবপোস্টে উল্লেখ করা নাই, তা করুন।
  • পরে এপ্লাই করছেন বলে হতাশ হবার কারন নেই। ক্লায়েন্ট প্রপোজাল্গুলো লাস্ট ইন ফার্স্ট আউট (LIFO) আকারে দেখতে পায়। 
  • কপি পেস্ট?? না, করবেন না। 



পাদটীকাঃ আমি কোনো বিশেষজ্ঞ নই। একজন ফ্রীল্যান্সার মাত্র। আপওয়ার্ক  ব্লগ অনুসরণ ও নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এ লেখা। শুধু নতুনদের কিঞ্চিৎ ধারণা দেয়ার জন্যই আমার এ প্রয়াস।




  

Monday, April 3, 2017

গল্প; কিন্তু গল্প নয়ঃ দাম বেশি হলেও প্রডাক্ট বিকোয়

অস্ট্রেলিয়ান এক ক্লায়েন্টের জব দেখে এপ্লাই করলাম। এসইও কোচ। ইয়োস্ট এসইও কোচ। তিনি একজন পাবলিক স্পীকার। ছয়টা ওয়েবসাইট তাঁর। এসইও নিজেই করবেন। তাই শিখতে চাচ্ছেন। মাস্টার বলেই বোধকরি- কাজ অন্য কারো হাতে দিতে নারাজ!

তো যাই হোক- একটু হাইরেটে (High Hourly Rate) এপ্লাই করলাম। উনি আমাকে ইন্টারভিউতে ডাকলেন। কথা বললেন। বললেন- "তোমার রেট বেশি"।

তারপর তিন দিন কোনো খবর নেই। চতুর্থদিনে আমাকে আমাকে মেসেজ দিলেনঃ
"আমি ১০ জনকে ইন্টারভিউ করলাম। আর সবার রেট তোমার এক তৃতীয়াংশ। কিন্তু তিন গুণ বেশি হলেও আমি তোমাকেই হায়ার করছি।"

কাজ শেষে তাঁর ফিডব্যাক কমেন্ট ছিলোঃ "This guy is the best I have had! I have been through 10 contractors to find him!"


শেষ কথাঃ গল্পটি এজন্যই বলা-
(১) আমি মনে করি নিজেকে সস্তা করা ঠিক নয়।
(২) কিছু প্রডাক্ট/স্কীল দাম বেশি বলেই বিক্রি বেশি হয়।
(৩) অবশ্যই রিজনেবল থাকতে হবে।
(৪) ফ্রীকাজ করে দেবার পক্ষে আমি নেই; তা যদি স্যাম্পলও হয়।
(৫) কিন্তু কোনোভাবেই নিজেকে হেয় করে উপস্থাপন নয়।
-
ব্যক্তিগত অভিমত
২০১৭০৪০৩

Featured Post

কষ্টযাপন

তাদের কষ্টবিলাস থাকে আমার কষ্ট বোধযাপন, আমার রঙের আকাশ দেখে ভাবে তারা উদযাপন। #অণুঅনুভব

জনপ্রিয়